পোষা পাখির হরমোনাল আচরণের লক্ষণ

শুরুতে পাখির মালিকদের জন্য পোষা পাখির আচরণগত পরিবর্তনগুলো বোঝা কঠিন হতে পারে। একদিন আপনার পোষা তোতা মিষ্টি, শান্ত এবং সুখী থাকে, আর পরের দিনই সে আচরণগতভাবে আগ্রাসী হয়ে ওঠে। এই পরিবর্তনের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো প্রজনন ঋতুর সময় পাখির হরমোনগত পরিবর্তন। নিচে পাখির হরমোনজনিত আচরণের কয়েকটি সাধারণ লক্ষণ এবং কীভাবে এই আচরণের সাথে মানিয়ে নেওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হলো।

পোষা পাখির হরমোনাল আচরণের লক্ষণ

১. চিৎকার করা

পোষা পাখিরা স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা শব্দ করে, তবে প্রজনন ঋতুর সময় পাখিরা অতিরিক্ত চিৎকার এবং আওয়াজ করে। অনেক পাখির মালিক এ সময়ে পাখির কণ্ঠস্বর বাড়িয়ে তোলাকে সবচেয়ে বিরক্তিকর মনে করেন। এই সময়ে পাখিকে বকাঝকা না করে বরং কিছুটা ধৈর্য ধরুন। চিৎকারকে উৎসাহিত না করে এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে পাখির আচরণ আরও খারাপ হতে পারে। হরমোনজনিত ঋতু শেষ হওয়ার পরও যদি এই চিৎকার করার অভ্যাস চলতে থাকে, তবে একজন আচরণ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

আরও পড়ুন-পোষা পাখিকে কথা বলা শেখাবেন যেভাবে

২. কামড়ানো

পাখির আচরণগত পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো আচমকা কামড়ানোর চেষ্টা। প্রজনন ঋতুর সময় এই আচরণ “ব্লাফিং” নামে পরিচিত। এটি মালিকদের জন্য ভীতিকর এবং কষ্টদায়ক হতে পারে, তবে এটি হরমোনজনিত এবং সময়ের সাথে এটি চলে যাবে। পাখি স্পে বা নিউটার করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তাই তাদের স্বাভাবিক প্রজনন আচরণ প্রাকৃতিকভাবেই প্রকাশ পায়। এই সময়ে পাখিকে সময় দেওয়া এবং ধীরে ধীরে এর সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন।

৩. এলাকা রক্ষা করা

যদি আপনার পাখি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি এলাকা রক্ষাকারী বা রক্ষনশীল হয়ে ওঠে, তবে এটিও হরমোনজনিত আচরণের লক্ষণ হতে পারে। এ সময়ে পাখি তার খাঁচা, খাবার, খেলনা বা প্রিয় মানুষের উপর খুব বেশি অধিকার দেখাতে পারে। এই আচরণ হরমোনজনিত ঋতু শেষ হওয়ার সাথে সাথে কমে যায়, তবে যদি এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে ওঠে, তবে একজন পাখি আচরণ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে পারেন।

৪. প্রজনন প্রদর্শন

প্রজনন ঋতুর সময় পাখির আচরণে কিছু অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। এ ধরনের আচরণে চোখ ছোট করা, খাবার উগড়ে ফেলা, ডানা ঝাপটানো বা লেজ মেলে ধরা অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, পুরুষ ভারতীয় রিংনেক তোতা প্রজনন ঋতুর সময় একটি “বাউ” প্রদর্শন করে। এই ধরনের আচরণ পাখির প্রাকৃতিক প্রবৃত্তি, তবে এ ধরনের আচরণ উৎসাহিত করা উচিত নয়, কারণ এটি পাখির যৌন হতাশার দিকে নিয়ে যেতে পারে। এ সময় পাখিটিকে খাঁচায় বা অন্য জায়গায় সরিয়ে শান্ত হতে দিন।

৫. পালক তোলা

কিছু পাখির মালিক লক্ষ্য করেন যে প্রজনন ঋতুর সময় তাদের পাখি অতিরিক্ত পরিমাণে পালক সাজায় বা এমনকি নিজের পালক তুলতে থাকে। এটি একটি সাধারণ বাসা তৈরির আচরণ, তবে পালক তোলা একটি খারাপ অভ্যাসে পরিণত হতে পারে এবং কখনও কখনও এটি গুরুতর অসুস্থতার লক্ষণ হতে পারে। এ ধরনের আচরণ দেখলে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

এই আচরণগুলো সাধারণত প্রজনন ঋতুর সময় ঘটে এবং ধৈর্যসহকারে সামাল দেওয়া সম্ভব। যদি আপনার পোষা পাখি অসুস্থ মনে হয়, অবিলম্বে একজন পশুচিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।

আরও পড়ুন-পোষা পাখির কিছু আচরণগত সমস্যা