পড়ালেখা শেষ হওয়ার আগেই আমাদের মধ্যে একটা কে কোন পেশাতে ঢুকবে তা নিয়ে নিরব প্রতিযোগিতা চলে। বলা বাহুল্য, অধিকাংশ চাকরির প্রতি ঝুকে। আর আমাদের দেশে চাকরি মানেই সরকারি চাকরি। অধিকাংশ অভিভাবকরা প্রাইভেট চাকরি কে চাকরিই মনে করতে চান না। যদিও প্রাইভেট চাকরির বেতন ভাতা সরকারি চাকরির চেয়ে অনেক বেশি।
আমাদের আজকের আলোচনা মূলত সরকারি চাকরি নিয়ে। আমরা চেষ্টা করব সরকারি চাকরি নিয়ে বিস্তারিত জানতে। আর্টিকেলের শেষে সরকারি চাকরি সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর দিয়েছি। আশা করি আপনাদের কাজে লাগবে।
সরকারি চাকরি কি
সহজে বললে সরকারের চাকরি। নিশ্চয়ই ভাবছেন এ আবার কেমন প্রশ্ন। যদি বলি সব চাকরিই সরকারি চাকরি না তাহলে কী বলবেন? যেমন- বিসিক বা যে কোন কর্পোরেশনের চাকরি কিন্তু সরকারি চাকরি না।
সকারি চাকরির প্রধান ও প্রথম শর্ত হচ্ছে, ঐ চাকরিটি সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে হবে এবং সরকারের রাজস্ব খাত থেকে বেতন ভাতাদি পেতে হবে। বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলো যদিও সরকারের রাজস্বখাত থেকেই বেতন ভাতা পেয়ে থাকে কিন্তু তাদের চাকরি নিয়ন্ত্রিত হয় তাদের নিজেস্ব আইনের মাধ্যমে। একই কথা বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অর্থাৎ এদের চাকরি কে সরকারি চাকরি বলা যাবে না।
সরকারি চাকরি মানে আপনি সরকারের বা প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন নীতি, আদেশ কার্যক্রম পালন করবেন এবং সরকারের কাছে জবাবদিহি করবেন। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কিন্তু সরকারের কাছে জবাবদিহি করেন না। তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করেন।
কীভাবে বুঝব কোন চাকরি সরকারি কি না
প্রজাতন্ত্রের বা সরকারি যে কোন চাকরি কোন না কোন মন্ত্রনালয় বা বিভাগের অধীন হবে। যেমন আমার চাকরি শ্রম মন্ত্রনালয়ের অধীন। আবার প্রোগ্রামাররা আইসিটি বিভাগের অধীন। সুতরাং যখন কোন চাকরির সার্কুলার দেখবেন আগে খেয়াল করবেন সেটা কি কোন মন্ত্রনালয়ের অধীন কি না। তাহলেই বুঝতে পারবেন।
এর বাইরে বিভিন্ন স্বায়ত্বশাসিত সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে যেমন- ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, আনবিক শক্তি কমিশন এরা সরকারের সব সুবিধাই পায়। বেতন, ভাতা, পেনশন ইত্যাদি। কিন্তু তারা নিজেস্ব নিয়মে চলে।
অস্থায়ী সরকারি চাকরি
সরকারি সব চাকরিই সম্পূর্ন অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ হয়। পরবর্তীতে সন্তোষজনক চাকরিকাল, ট্রেনিং, পরীক্ষা ইত্যাদি সাপেক্ষে স্থায়ীকরন করা হয়।
সরকারি প্রতিটই অফিসে নির্দিষ্ট সংখ্যক বিভিন্ন পদ থাকে। এই পদ গুলো স্থায়ী হতে পারে আবার অস্থায়ীও হতে পারে। সরকারি চাকরির সার্কুলার খেয়াল করলে দেখবেন বলা থাকে স্থায়ী পদে এত সংখ্যক লোক নিয়োগ হবে। এই পদ যদি স্থায়ী হয় তাহলে ঐ চাকরি অবশ্যই স্থায়ী হবে। কিন্তু যদি পদ স্থায়ী না হয় তাহলে ঐ চাকরি স্থায়ী নাও হতে পারে। যদিও অস্থায়ী পদ একটা নির্দিষ্ট সময় পরে সাধারনত স্থায়ী করা হয়। তবে বিলুপ্ত হওয়ার ঘটনাও আছে।
সুতরাং চাকরি অস্থায়ী হলেও কোন সমস্যা নেই। যদি পদ স্থায়ী হয় তাহলে ঐ চাকরি অবশ্যই স্থায়ী হবে। চাকরি আর পদ দুইটা ভিন্ন জিনিস।
প্রকল্পের চাকরি কিন্তু স্থায়ী চাকরি না। কেননা ঐ পদ গুলো শুধুমাত্র ঐ প্রকল্পের জন্যই তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্প শেষ হয়ে গেলে ঐ পদের মেয়াদ শেষ হয়ে যায় ফলে চাকরিও শেষ হয়ে যায়। যদিও অনেকে বলবে প্রকল্পের চাকরি স্থায়ী হয়। এটা ভুল তথ্য। প্রকল্পের চাকরি স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। যেমন পদ্মা সেতু একটা প্রকল্প। এখানে যারা নিয়োগ পেয়েছে তাদের কি সবার চাকরি স্থায়ী হবে? হবে না।
কিছু কিছু প্রকল্প আছে যেগুলো প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সরকার যে কোন একটা মন্ত্রনালয়ে আত্তীকরন করে নেয়। যেমন- গাজিপুরের হাইটেক পার্ক প্রকল্পে যারা নিয়োগ পেয়েছিলেন তাদের অনেকেই সেখানে স্থায়ী হয়েছেন। কিন্তু সব প্রকল্প নিয়ে তো সরকারে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকে না। তাই প্রকল্পের চাকরি স্থায়ী হবে না এটা ধরে নিন।
সরকারি চাকরির নিয়োগ হয় কিভাবে
নবম ও দশম গ্রেড (আগের ফার্স্ট ও সেকেন্ড ক্লাস) কর্মকর্তাদের পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ হয়। এর ব্যতিক্রমও আছে। যেমন- পুলিশের এস আই দের নিয়োগ পুলিশ নিজেই দিতে পারেন। দশম গ্রেডের নিচের পদ গুলো মন্ত্রনালয় থেকে নিয়োগ হয়।
স্থানীয় পর্যায়ে যেমন ডিসি অফিসের কিছু পদের নিয়োগ ডিসি নিজেই দিতে পারেন। এছাড়া বাকি সব নিয়োগ মন্ত্রনালয় থেকেই নিয়ন্ত্রন করা হয়।
স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান গুলো নিজেদের নিয়োগ নিজেরাই দেয়। সেখানে সরকার মাথা ঘামায় না।
রাজস্বখাতে নিয়োগ কি
যখন কোন সরকারি চাকরির বেতন ভাতা সরকারের রাজস্বখাত থেকে মেটানো হয় তখন ঐ নিয়োগ কে রাজস্বখাতে নিয়োগ বলে। প্রকল্পের চাকরির বেতন ভাতা ঐ প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা থেকে প্রদান করা হয়। ফলে প্রকল্পের নিয়োগ রাজস্বখাতে বলা যায় না। রাজস্বখাতের সব নিয়োগই স্থায়ীকরন হয়।
সরকারি চাকরি কত প্রকার
মোটা দাগে দুই প্রকার। ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার।
গেজেটেড কর্মকর্তা কি
সরকার যখন কাউকে নিয়োগ দেয় তখন যদি সেটা গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে প্রকাশ করে তাহলে তারা গেজেটেড কর্মকর্তা। এরা ক্যাডার নন ক্যাডার উভয়েই হতে পারেন। আনবিক শক্তি কমিশন, পাট গবেষনা কেন্দ্র বা সরকারি কোন ব্যাংকের কোন কর্মকর্তার জন্য কিন্তু কোন গেজেট নোটিফিকেশন হয় না। এ জন্য তারা প্রথম শ্রেনি বা নবম গ্রেড কর্মকর্তা হতে পারেন কিন্তু গেজেটেড না।
ব্যাংকের নবম গ্রেডের কর্মকর্তারা কি কাগজপত্র সত্যায়িত করতে পারবেন?
ব্যাংকের নবম গ্রেডের কর্মকর্তারা গেজেটেড নন। কাজেই তারা সত্যায়িত করতে পারবেন না। শুধুমাত্র গেজেট নোটিফিকেশন আছে এমন প্রথম শ্রেনির (৯ ম গ্রেডের) কর্মকর্তারাই কেবল কাগজ পত্র সত্যায়িত করতে পারেন।
সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে লেখা থাকলে সেটা কি স্থায়ী হয়?
প্রকল্পের চাকরি বাদে সকল স্থায়ী পদে সব সময় অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ হয়। অর্থাৎ, পদ যদি স্থায়ী হয় তাহলে চাকরি অবশ্যই স্থায়ীকরন হবে।
চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে দেখবেন যে লেখা আছে ‘রাজস্ব খাতে অস্থায়ী ভিত্তিতে’, রাজস্ব খাতের সব অস্থায়ী চাকরিই স্থায়ীকরন হবে। প্রকল্পের চাকরি স্থায়ীকরন হওয়ার সম্ভাবনা কম।
অর্থাৎ রাজস্বখাত ছাড়া অন্যান্য সব নিয়োগই স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম। মাঝেমধ্যে দুই একটা যে হয় না তা নয়। কিন্তু সে সম্ভাবনা খুব কম।
ইদানিং আউট সোর্সের ভিত্তিতে নিয়োগ হয়। বিভিন্ন ঠিকাদার কোম্পানী এই নিয়োগ গুলো দিয়ে থাকে। এগুলো কিন্তু সরকারি চাকরি না। যদিও কাজ সরকারি প্রতিষ্ঠানেই।
আউট সোর্স মানেই একটা নির্দিষ্ট সময় পরে আপনার চুক্তি শেষ হয়ে যাবে। তারা কোন ভাবেই স্থায়ী হবেন না। কোম্পানী যত লোভই দেখাক না কেন এগুলো স্থায়ী হবে না।
মোট কথা, সকল সরকারি চাকরিই অস্থায়ী নিয়োগ হয়। এর মধ্যে যেগুলো রাজস্ব খাতে নিয়োগ হয় সেগুলো পরে স্থায়ীকরন হয়। বাকি গুলো হয় না।
সরকারি চাকরি তে মৌখিক পরীক্ষা কি কি কাগজ নিতে হয়?
আপনি যে পদে মৌখিক পরীক্ষা দিবেন সেটা সংশ্লিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ লাগবে। ধরেন কম্পিউটার অপারেটর পদে মৌখিক পরীক্ষা দিবেন, সেক্ষেত্রে কম্পিউটার ট্রেনিংয়ের সনদ যদি সার্কুলারে চেয়ে থাকে তাহলে সেটা নিতে হবে। এছাড়া সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদপত্র নিয়ে যেতে হবে।
আপনি যদি কোন মামলার আসামি হন তাহলে মামলা সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র নিতে হবে।
এপেয়ার্ড সার্টিফিকেট নিতে হবে যদি আবেদনের সময় রেজাল্ট পাব্লিশ না হয়ে থাকে।
এমনকি বিভাগীয় প্রধানের প্রত্যয়ন ও নিতে হবে এই মর্মে যে, আপনি যখন আবেদন করেছেন তখন সব পরীক্ষা শেষ হয়েছিল।
সরকারি চাকরিজীবী হয়ে থাকলে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতির আদেশ নিতে হবে। নয়তো ভাইভা নিবে না।
যেকোনো সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে কি বাবা-মায়ের এনআইডি কার্ড দেখাতে হয়?
না দেখাতে হয় না। তবে পুলিশ হয়রানি করার জন্য চাইতে পারে। ওদের ভালো করে আপ্যায়ন করলে আর কোন সমস্যা থাকবে না।
বিসিএস বা যেকোনো সরকারি চাকরি পরিক্ষায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাকগ্রাউন্ড কি প্রভাব ফেলে?
যদি লিখিত পরীক্ষা ভালো হয় তাহলে মৌখিক পরীক্ষার নম্বরে খুব একটা হেরফের হয় না। প্রতিটি বিসিএসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ক্যান্ডিডেট ক্যাডার হচ্ছেন।
তবে এটা সত্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের/বুয়েটের স্টুডেন্ট প্রায়োরিটি পায়। উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা বেশির ভাগ আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কাজেই নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীর প্রতি দূর্বলতা থাকেই। কিন্তু সেটা প্রকট না।
নিজেকে ভালো ভাবে প্রস্তুত করলে বিশ্ববিদ্যালয় কোন ফ্যাক্টর না।
আমার সব কাগজপত্রে আমার বাবার নাম আবুল হোসেন কিন্তু বাবার NID তে বাবার নাম মোঃ আবুল হোসেন (রাজু)।
এতে সরকারি চাকরির ক্ষেএে পুলিশ ভেরিফিকেশনে বড় কোনো সমস্যা হবে?
কোন সমস্যা হবে না। পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় শুধুমাত্র আপনার আইডি নম্বর চাইতে পারে। আপনার বাবার/মায়েরটা চাইবে না। আমার নিজের একই সমস্যা। আমার এসএসসি সার্টিফিকেট এর মধ্যে মায়ের নামের সাথে অনার্সের মিল নাই। আবার আমার ভোটার আইডিতে বাবার নাম এক রকম (মোঃ সোলায়মান) আমার ছোট ভাইয়ের অন্য রকম (সোলায়মান মিয়া) বাবারটা আরেক রকম (সোলায়মান আহমেদ) । আমি আর আমার ভাই দুইজনই সরকারি চাকরি করি।
সরকারি চাকরি সর্বনিম্ন কত বছর করলে পেনশন ও অন্যান্য সুবিধা পাওয়া যায়?
পেনশন যোগ্য চাকরি কাল হল ৫ বছর। অর্থাৎ ৫ বছর পরে যদি মেডিকেল বোর্ড কর্তৃক আপনি আনফিট ঘোষিত হন বা মারা যান সেক্ষেত্রে পেনশন ও অন্যান্য সুবিধা আনুপাতিক হারে পাবেন। ২৫ বছরের আগে স্বেচ্ছায় অবসরে গেলে কোন বেনিফিট পাবেন না। যদিও হাইকোর্ট বলেছে বেনিফিট দিতে হবে কিন্তু সরকার এখনো আইন পরিবর্তন বা কোন গেজেট নোটিশ দেয় নি।
আমার এসএসসি এইচএসসি এবং অনার্সে আমি আমার পুরো নামটাই সিগনেচার করেছি। সরকারি চাকরির অ্যাপ্লিকেশন ফর্মেও কি সেই সিগনেচার টাই করবো? নাকি ছোট করে একটা নাম দিয়ে সিগনেচার করলেও হবে?
সিগ্নেচার একই হতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আপনি নতুন করে ছোট সিগনেচার ব্যবহার করতে পারেন।
তবে যেটা আবেদন করার সময় ব্যবহার করবেন সেটা পরবর্তীতে নিয়োগ পাওয়া পর্যন্ত ব্যবহার করতে হবে।
বি সি এসে ভাইবা তে উওীর্ন হলেই কি সবাই নন ক্যাডার চাকরি পায়? নাকি বাদও পরে?
না, সবাই পায় না। এটা নির্ভর করে নন ক্যাডারে কি পরিমাণ শূন্য পদের চাহিদা পিএসসি তে গিয়েছে তার উপরে। যদি নন ক্যাডারে যতজন টিকেছেন তার চেয়ে কম চাহিদাপত্র পিএসসি তে যায় তাহলে সবাই চাকরি পাবেন না। এক্ষেত্রে নন ক্যাডারে যারা টিকেছে তারা যদি বিভিন্ন অধিদপ্তর/কার্যালয়ে যোগাযোগ করে শূন্য পদের চাহিদা পিএসসি তে পাঠানোর ব্যবস্থা করে তাহলে সবার চাকরি হওয়া সম্ভব। ৩৭ তম বিসিএস নন ক্যাডারে তাই করা হয়েছিল। আমরা যত জন টিকেছিলাম তার চেয়ে বেশি পদের চাহিত পিএসসি তে গিয়েছিল।
আমি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করেছি এখনো রেজাল্ট বের হয়নি। তো আমি সরকারি চাকুরির জন্য প্রস্তুুতি নিতে চাচ্ছি। মাস্টার্স না থাকলে কি সমস্যা হবে?
শিক্ষকতা ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কোন সরকারি চাকরি তে মাস্টার্স লাগে না। মাস্টার্স যেন না লাগে সেজন্যই অনার্স চার বছর করা হয়েছিল।
সরকারি চাকরির প্রস্তুতির জন্য কম্পিউটারের কি কি কোর্স জানা দরকার?
এটা সার্কুলারেই বলা থাকে কোন কোন কোর্স করা থাকতে হবে। কম্পিউটার অপারেটর পদে আবেদনের জন্য সরকার অনুমোদিত ট্রেনিং ইন্সটিটিউট থেকে কম্পিউটার ট্রেনিং এর সার্টিফিকেট লাগে। এছাড়া আলাদা কোন কোর্স করা লাগে না। বর্তমানে কম্পিউটারে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতেই হবে। কেননা, সরকারি বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানেই ১০০% কাজ কম্পিউটারে হয়। বিশেষ করে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট আর ইন্টারনেট ব্রাউজিং জানা থাকতে হবে। সে সাথে বাংলা ও ইংরেজি টাইপিং জানা থাকতে হবে। যদিও কিছু কিছু সরকারি দপ্তরে বাংলা টাইপের জন্য বিজয় কিবোর্ড ব্যবহার করতে বলে তবে অভ্রতেও কোন সমস্যা নেই।
সাটিফিকেট ও এন আইডিতে পুরোপুরি মিল না থাকলে সরকারি চাকরি হয় কী?
পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় সমস্যা হবে। পুলিশ আপনার এন আই ডি আর সার্টিফিকেটের কপি চাইতে পারে। কাজেই এন আইডিতে নাম সংশোধন করে নেয়াই ভালো হবে।
৫-৬ মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে সরকারি জব পরীক্ষাগুলোতে ভাল করা সম্ভব কি না?
অবশ্যই সম্ভব। তবে অক্লান্ত পরিশ্রম না করে গুছিয়ে, টেকনিক্যালি প্রস্তুতি নিলে সহজ হবে। অবশ্যই মোবাইল ব্যবহার কমাতে হবে।
আমার এইচএসসির রেজাল্ট তো খারাপ আমি কি বিসিএস পরিক্ষা দিতে পারবো? আর এইচএসসি তে কত পয়েন্ট লাগে বিসিএস পরিক্ষা দিতে?
বিসিএসের শিক্ষাগত যোগ্যতা হল- এস এস সি, এইচ এস সি এবং অনার্স (চার বছর মেয়াদি) এই তিনটি পরীক্ষার মধ্যে দুটাতে তৃতীয় বিভাগ থাকা চলবে না। একটাতে পেতে পারেন। এস সি এবং এইচএসসি তৃতীয় বিভাগ সমান ২.৫ আর অনার্সে ২.০ পয়েন্ট।
সরকারি চাকরি কেন করতে চান?
পজিটিভলি বললে,
১. জনগনের সাথে সরাসরি কাজ করা যায়।
২. জব সিকিউরিটি ভালো
৩. সামাজিক মর্যাদা অনেক বেশি
৪. বৃদ্ধ বয়সে পেনশন পাওয়া যায়।
কোনভাবেই ভাইভায় নেগেটিভ কোন উত্তর দিবেন না। যদি সেটা আপনার মতামতের বিরুদ্ধেও যায় তবুও না।
আশা করি আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছি। তারপরেও যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা চেষ্টা করব উত্তর দিতে।