বাংলদেশে HSC পরীক্ষার রেজাল্ট হওয়ার পর থেকেই শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা শুরু হয়- কোন বিষয়ে পড়লে ভালো চাকরি পাওয়া যাবে। সন্তানের ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে এই ভাবনা আসা খুবই স্বাভাবিক।
দাপ্তরিক কাজে কিছুদিন আগে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সম্মেলন কক্ষে যেতে হয়েছিল (ফেব্রুয়ারি, ২০২২, আমার কর্মস্থল টাংগাইল)। সেখানে দেখলাম গণপূর্ত অফিসের এক স্যার তার মেয়েকে কোথায় কোন বিষয়ে পড়াবেন সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। মেয়ে বর্তমানে একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ছে। সে আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানে চান্স পেয়েছে। আশেপাশের সবাই বিবিএ কন্টিনিউ করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছিল। অনেকে বলছিলেন মনোবিজ্ঞান পড়ে কোন চাকরি পাবে না। অথচ আমার পরিচিত এক ভাই শিশু মনোবিজ্ঞানী। তার সিরিয়াল পেতে হলে দুই সপ্তাহ আগে থেকে যোগাযোগ করতে হয়।
এই আর্টিকেলে উচ্চ শিক্ষায় অর্থাৎ অনার্সে কোন বিষয়ে পড়লে ভবিষ্যতে কি ধরনের চাকরি পাওয়া যেতে পারে সেটা নিয়ে আলোচনা করব। আমার মতের সাথে আপনার মত নাও মিলতে পারে। সেক্ষেত্রে কমেন্ট বক্সে জানাবেন।
অনার্সের বিষয়ভিত্তিক চাকরির আলোচনার আগে চাকরি নিয়ে কিছুটা আলোচনা করে নেই। চাকরির বাজার নিয়ে ধারণা আমাদের শিক্ষার্থীদের একেবারেই নেই। উন্নত বিশ্বে স্টুডেন্ট কাউন্সিলর থাকে যারা স্টুডেন্টদের ভবিষ্যৎ পেশা নিয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে। আমাদের পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে এরকম পরামর্শক/কাউন্সিলর আছে। আমাদের শিক্ষকরাই কাউন্সিলর হন। তাদের জব মার্কেট সম্পর্কে কোন ধারণা আছে বলে কখনো মনে হয়নি।
আমাদের দেশে সাব্জেক্ট রিলেটেড জবের সংখ্যা সীমিত। বেশিরভাগ বিজ্ঞানের বিষয় গুলোতেই এর প্রাধান্য আছে। আর্টসের মধ্যে নৃবিজ্ঞানের চাহিদা এনজিও গুলোর মধ্যে বেশি। কমার্সের অবশ্য বেশ ভালো সুযোগ আছে এক্ষেত্রে। বিশেষ করে একাউন্টিং আর মার্কেটিং সাব্জেক্ট এর।
সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে যেহেতু বিষয়ভিত্তিক বাধ্যবাধকতা কম সেজন্য আমাদের আলোচনা মূলত বেসরকারি চাকরি নিয়ে। বেসরকারি চাকরির সব চেয়ে বড় আর আকর্ষণীয় খাত ব্যাংকিং। বেসরকারি ব্যাংক গুলো গনিত আর পরিসংখ্যান বাদে বিজ্ঞানের বাকি সাবজেক্ট গুলো এভয়েড করে। ব্যাংক গুলোতে কমার্সের সাবজেক্ট গুলো প্রায়োরিটি পায়।
বিজ্ঞানের বিষয় গুলোর মধ্যে কেমিস্ট্রির/বায়োকেমিস্ট্রি চাকরি প্রচুর (আমি নিজে কেমিস্ট্রির স্টুডেন্ট)। এপ্লাইড ফিজিক্সের কিছু চাকরি আছে। মাইক্রোবায়োলজির চাহিদা আছে। বাকি গুলো খুব একটা নেই। ফার্মেসি মানেই চাকরি।
মেডিকেল আর ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে বলার কিছু নেই। পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি রিলেটেড সাবজেক্ট গুলোর সুযোগ খুবই ভালো এখন। মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে না পড়াই ভালো।
সাব্জেক্ট রিলেটেড জবের প্রধান সমস্যা হল, একটা সময় পরে কেরিয়ারে আর কোন ডেভেলপমেন্ট থাকে না। অর্থাৎ কেরিয়ার একটা সময় পরে থেমে যায়। সবাই চায় তার চাকরি জীবনের একটা পর্যায়ে ডিসিশন মেকিং রোল প্লে করতে। এটা সাবজেক্ট রিলেটেড জবের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হয় না।
অনেক কথা হলো এবার দেখা যাক কোন বিষয়ের সুযোগ কেমন।
মানবিক/আর্টস বিভাগে পড়ে কি হওয়া যাবে
ইংরেজি
ইংরেজিতে পড়লে চাকরি নিয়ে টেনশনের কিছুই নেই। ইনফ্যাক্ট, আপনি যে সাবজেক্ট নিয়েই পড়েন না কেন, আপনি যদি ইংরেজিতে দক্ষ হন, তাহলে বেশিরভাগ চাকরির পরীক্ষায় আপনি পাশ করবেন।
ইতিহাস/রাষ্ট্র বিজ্ঞান/বাংলা/অর্থনীতি
অর্থনীতির প্রার্থীর ব্যাংক জব পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা পায়। এছাড়া বিসিএস এ শিক্ষা ক্যাডার ছাড়া অন্য কোথাও বিষয় ভিত্তিক চাকরি নেই। এগুলোকে তাই জেনারেল সাবজেক্ট বলা যায়।
নৃবিজ্ঞান
বিষয়টার প্রতি এনজিও গুলোর চোখ থাকে। আমার যত নৃবিজ্ঞানের পরিচিত আছে সবাই লাইফের কোন না কোন সময় এনজিওতে চাকরি করেছে। সমাজকল্যাণ/সমাজকর্ম বিষয়ের শিক্ষার্থীদের গার্মেন্টস সেক্টরে ওয়েলফেয়ার কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
আইন
আইন বিষয়ের চাহিদা সব সময় ছিল, আছে এবং থাকবে। তবে আইন বিষয়ে পড়ার আগে সিদ্ধান্ত নিন আসলেই আইনজীবী হবেন কি না। নয়তো বিভিন্ন কোম্পানির লিগ্যাল এডভাইজর হতে হবে। কেননা সবাই আদালতে প্র্যাক্টিস করতে পারেন না। তবে জুডিসিয়াল সার্ভিসে ভালো সুযোগ আছে।
সমজাকল্যাণ/সমাজকর্ম
রানা প্লাজা দূর্ঘটণার পর বাইরের দেশের বায়াররা বিভিন্ন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি গুলোতে কল্যাণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারে চাপ দেয়। ফলে গার্মেন্টস গুলোতে ওয়েলফেয়ার অফিসার নামের একটা পদ সৃষ্টি হয়েছে। সমজাকল্যাণ/সমাজকর্ম বিষয়ের স্নাতকরা এই পদে অগ্রাধিকার পায়। স্যালারি মোটামুটি ভালোই।
ব্যবসায় শিক্ষা/কমার্স, অনার্সে কমার্সের সাব্জেক্ট
একাউন্টিং, মার্কেটিং, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং, ম্যানেজমেন্ট এগুলো হল পিউর কমার্সের সাবজেক্ট। তবে এইচ এস সি তে কমার্স পড়লে একমাত্র বিজ্ঞান বিভাগ ব্যতীত আর্টেস সব সাবজেক্ট গুলোতে অনার্স পড়তে পাড়বেন।
একাউন্টিং আর মার্কেটিং সাব্জেক্ট এর চাহিদা প্রচুর। ভালো ইউনিভার্সিটি থেকে পড়তে পারলে তো কথাই নাই। ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়লে হিউম্যান রিসোর্স এর চাকরি পাওয়া যায়। ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং সাব্জেক্ট এর চাকরি শুধুমাত্র ব্যাংকই না অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলোতেও আছে। কমার্সের সাবজেক্ট গুলো এমন যে, একদম এন্ট্রি লেভেলের জবে ঢুকে প্রতিষ্ঠার সিইও পর্যন্ত হওয়া যায়।

একাউন্টিং
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের একাউন্ট্যান্ট দরকার। কাজেই একাউন্টিং পড়লে চাকরি পাওয়া যায় সহজে। একাউন্টিং পড়লে অনার্স শেষ করে যেকোনো একটা প্রফেশনাল ডিগ্রি যেমন- ACCA, FCMA নিতে পারলে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট দ্রুত হয়। দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি গুলোর কাছে এই প্রফেশনাল ডিগ্রী গুলোর গুরুত্ব অনেক। আপনি একটা সময়ে গিয়ে কোম্পানীর শীর্ষস্থানীয় পদে যেতে পারবেন।
একাউন্ট্যান্টরা শুধুমাত্র টাকা পয়সার হিসেবেই রাখে না, তারা মালিক পক্ষকে কস্ট ম্যানেজমেন্ট করতে সাহায্য করে। কোম্পানীর ব্যয় কমাতে সাহায্য করে ফলে মালিক পক্ষ সব সময় এদের পছন্দ করে।
মার্কেটিং
যেকোনো কোম্পানির নাম বলুন না কেন, মালিক পক্ষ গুরুত্ব দেয় সব চেয়ে বেশি মার্কেটিং বিভাগ কে কেননা তারা পণ্য বিক্রি করে টাকা আনে। আমার সাবেক কর্মস্থলে (দেশের শীর্ষ স্থানীয় ওষুধ কোম্পানি) দেখেছি অন্যান্য সব ডিপার্টমেন্টের ম্যানেজাররা মার্কেটিং ডিভিশন কে কতটা ভয় পেত। মার্কেটিং থেকে যদি বলত অমুক প্রোডাক্ট আগামীকাল লাগবে, বাকি সব বাদ দিয়ে তাদের কথা আগে শুনতে হত। নইলে চাকরি থাকবে না। প্রোডাক্ট রিলিজ দিতে দেরি করায় অনেক ম্যানেজারের চাকরি চলে যেতে দেখেছি।
যেহেতু মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট সেল করে টাকা আনে সেহেতু তাদের বেতন বোনাস অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের চেয়ে বেশি হয়। প্রমোশনও বেশি হয়। এজন্য আমার মনে হয়, কমার্স পড়লে অনার্সে মার্কেটিং পড়া উচিৎ। অবশ্য, মার্কেটিং এর জন্য মাইন্ডসেট না থাকলে সেটা হিতে বিপরীত হতে পারে। কেননা মার্কেটিং জব অন্য জবের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। মার্কেটিং এর কাজের প্রেশার অন্যরকম।
ম্যানেজমেন্ট
ম্যানেজমেন্টে পড়লে সব চেয়ে বেশি জব পাওয়া যায় হিউম্যান রিসোর্স ডিপার্টমেন্টে। তবে এক্ষেত্রে অনার্সের পরে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টে এমবিএ করলে ভালো হয়। আমাদের দেশে এখন প্রচুর গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি আছে, এখানে হিউম্যান রিসোর্স ডিপার্টমেন্টে প্রচুর লোক লাগে। তাই ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়লে বেশি দিন বসে থাকতে হয় না। তবে উপরের দিকে যাওয়া একটু স্লো। হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজার হিসেবে মালিক পক্ষরা এখনো আর্মি বা বিভিন্ন বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অফিসারদের অগ্রাধিকার দেয়।
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং
নাম দেখেই বুঝতে পারছেন ব্যাংকে এদের প্রায়োরিটি বেশি, বিশেষ করে প্রাইভাট ব্যাংক গুলোতে। এছাড়া নন ব্যাংকিং আর্থিক খাত গুলোতেও এরা ভালো নিয়োগ পায়। এক বড় ভাই সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসারের চাকরি ছেড়ে ইউসিবি ব্যাংকে জয়েন করেছিলেন, উনি ঢাকা ইউনিভার্সিটির ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং এর ছাত্র ছিলেন। এখন বেশ ভালো পজিশনে আছেন।
কমার্সের ক্ষেত্রে ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেখে পড়া জরুরি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ মানেই পাস করা মাত্র দুর্দান্ত সব চাকরির অফার পাওয়া। বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নর্থ সাউথ আর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় বেশ ভালো পজিশনে আছে। যদি সামর্থ্য থাকে তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে এই দুই বিশ্ববিদ্যালয় পড়াটা বেস্ট হবে।
বিজ্ঞান বিভাগে পড়ে কি চাকরি পাওয়া যাবে
যদি ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছা না থাকে তাহলে বলব বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয় (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বোটানি, জুওলজি, গনিত) নিয়ে অনার্স পড়ার কোন মানে নেই। শুধু শুধু কষ্ট করতে হবে।
ফার্মেসী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক ইউনিটে এখনো ফার্স্ট চয়েস বেশিরভাগ প্রার্থী ফার্মেসি দেয়। এর কারন জব এভেইলেবিলিটি। বাংলাদেশের ফার্মাসিউটক্যালস সেক্টর পুরোটাই এদের নিয়ন্ত্রনে। আর গার্মেন্টসের পরে বাংলাদেশের সব চেয়ে সম্ভাবনাময় খাত হচ্ছে ফার্মা সেক্টর। পাশ করা মাত্রই চাকরি। বেতন বেশ ভালো। প্রমোশন ভালো। সত্যিকথা বলতে ব্যাংকিং জবের চেয়ে অনেক অনেক ভালো।
কাজেই ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার না হতে পারলে ফার্মেসি পড়ুন। চাকরি নিয়ে ভাবতে হবে না।
রসায়ন/প্রাণরসায়ন/ফলিত রসায়ন
বিজ্ঞানের এই একটা সাব্জেক্ট যেটাতে আপনার জন্য প্রচুর চাকরি আছে। পাশ করে বের হওয়া মাত্র আপনি চাকরি পাবেন। এমনি মাস্টার্স না করেও চাকরি পাবেন। আমি নিজে রসায়নের ছাত্র। অনার্স শেষ করেই চাকরিতে ঢুকেছিলাম।
বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালস গুলোতে প্রতিবছর প্রচুর রসায়নের লোক নেয় ভবিষ্যতেও নিবে। এছাড়া গার্মেন্টের ইটিপিতের, ডাইয়িং হাউজ গুলোতে, বিভিন্ন কেমিকেল কোম্পানী গুলোতে অনেক চাকরি আছে। স্যালারিও খারাপ দেয় না। তবে প্রমোশন স্কোপ কম। সর্বোচ্চ ল্যাব ম্যানেরজার বা কিউসি ম্যানেজার হতে পারবেন। উপরের দিকে যাওয়ার সুযোগ নেই।
ফিজিক্স বা পদার্থ বিজ্ঞান
বাংলাদেশ এটমিক এনার্জি কমিশন আর বিসিএস আই আরে কিছু চাকরি আছে ফিজিক্সের। কিন্তু সেখানে স্বজনপ্রীতি আর ইউনিভার্সিটি প্রীতি অনেক বেশি।
কিছু ইন্সট্রুমেন্ট সাপ্লাই কোম্পানী আছে যারা এপ্লাইড ফিজিক্স/ ফিজিস্কের ছাত্রদের নেয় (AQC, Technoworth, Tredsworth, Invent) কিন্তু সেটা সীমিত পরিমানে।
গণিত/পরিসংখ্যান
গনিতের এক শিক্ষকতা ছাড়া আলাদা কোন জব ফিল্ড নেই। তবে পরিসংখ্যানে আছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, বিভিন্ন এনজিও গুলোতে পরিসংখ্যানের লোক নেয়।
উদ্ভিদবিদ্যা/প্রানীবিদ্যা
কৃষিবিষয়ক কিছু কোম্পানিতে কিছু চাকরি আছে। তবে সেটা খুবই কম।
বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে চাইলে অবশ্যই এপ্লাইড সাব্জেক্ট গুলোতে পড়বেন। যেমন- ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল, কম্পিউটার সাইন্স, আইটি, কৃষি বিষয়ক সাব্জেক্ট গুলো। পিউর বিজ্ঞান সাব্জেক্ট নিয়ে পড়ে কোন লাভ নেই। পাচটা বছর শুধু শুধু কষ্ট করবেন।
কৃষি বা এগ্রিকালচার/ভেটেরেনারি/পশুপালন/এগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিং
উপরের প্রতিটি সাব্জেক্টে অনেক চাকরি আছে। বিভিন্ন এগ্রো কোম্পানি গুলো এদের লুফে নেয়। বিশেষ করে যদি আপনি ভেটেরেনারি ডাক্তার হন তাহলে খুবই ভালো ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।
বিসিএসে কৃষি ক্যাডারে তুলনা মূলক প্রতিযোগীতা কম হয়।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে কোন চাকরি পাওয়া যাবে
ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বেশিরভাগ সময় ফার্স্ট প্রায়োরিটি পায়। এর কারন এর হিউজ চাকরির ক্ষেত্র। এমন কোন ফ্যাক্টরি নেই যেখানে বিদ্যুৎ লাগে না। এছাড়াও পাওয়ার সেক্টর তো আছেই। হাই স্যালারি, সুযোগ সুবিধা কি নেই এই সাব্জেক্টে!
মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং
সব ফ্যাক্টরিতে জব পাবেন। বিভিন্ন নামিদামী গাড়ির কোম্পানী গুলোতে জব পাবেন। আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত মোটর কোম্পানি গুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে, ফলে তাদের প্রচুর ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার লাগবে।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং আর আর্কিটেকচার
সিভিল আর আর্কিটেকচারের ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট একটু স্লো। বিশেষ করে গত করোনার মধ্যে প্রচুর সিভিল/আর্কিটেক্টের চাকরি চলে যেতে দেখেছি। কিন্তু এখানে একটা সুবিধা হল আপনি আপনার নিজের প্রতিষ্ঠান খুলতে পারবেন। আর একবার পরিচিত হয়ে গেলে কাজ করার সময় পাবেন না।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
গার্মেন্টস সেক্টরে প্রচুর চাকরি আছে। তবে জব চেঞ্জ হয় খুব বেশি। এরা কয়েক বছর চাকরি করে তারপরে নিজেই একটা গার্মেন্টস খুলে বসে।
গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলে, নাক সিটকায়। কিন্তু আমাদের দেশের অর্থনীতি এই সেক্টরের উপরেই দাঁড়িয়ে আছে। দিন দিন নতুন নতুন ফ্যাকটরি হচ্ছে। সেখানে লোকের চাহিদা প্রচুর। স্যালারিও বেশ ভালো।
কম্পিউটার সাইন্স বা আইসিটি
এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লব চলছে অর্থাৎ ইন্টারনেট বিপ্লব। কাজেই কম্পিউটার সাইন্স বা আইসিটির ভালো চাহিদা আছে। তবে কম্পিউটার নিয়ে পড়ার আগে খেয়াল রাখবেন ঐ সাব্জেক্ট আসলেই আপনার ভালো লাগে কি না। প্রচুর কাজ আছে। যদি চাকরি না করতে চান তাহলে ফ্রিল্যান্সিং করার সুযোগ আছে। তবে আমাদের দেশে এখনো এই আইটি সেক্টর সেভাবে গড়ে উঠেনি। ফলে জব ডেভলপমেন্ট খুবই স্লো।

মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং
মোটা বেতনের চাকরি রে ভাই এই মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং। জাহাজে জাহাজে কাটে সারা বছর। সমস্যা একটাই ছয় মাস থাকবেন জাহাজে বাকি ছয় মাস দেশে। ফ্যামিলি ছেড়ে এত দিন বাইরে থাকা অনেকি মেনে নিতে পারেনা।
দেশে বর্তমানে বেশ কিছু মেরিন একাডেমি গড়ে উঠেছে। ভুলেও বেসরকারি মেরিন একাডেমিতে পড়বেন না। তারা অনেক চটকদার কথা বার্তা বলে কিন্তু কোর্স শেষে কোন জাহাজে কাজ পাবেন না। মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ছাড়া পড়লে কোন জাহাজই চাকরি দেয় না। এমনিতে আমাদের দেশের পাসপোর্টের দূর্নাম আছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। কাজেই চটকদার বিজ্ঞাপনে বিভ্রান্ত হবেন না। মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে হলে অবশ্যই সরকারি যেটা আছে (বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়) পড়বেন।
এমবিবিএস বা ডাক্তারি
ডাক্তারি পড়ার ক্ষেত্রে বলব, সরকারি কলেজ গুলো তে চান্স না পেলে বেসরকারি কলেজে যাওয়ার দরকার নাই। প্রচুর টাকা ব্যয় হবে। শুধুমাত্র এমবিবিএস পাশ করলেই হয় না। পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রি নিতে না পারলে তেমন কোন লাভ নাই। ডাক্তারের পড়া কখনো শেষ হয় না। আরেকটা আজব জিনিস হল তাদের ব্যক্তিগত জীবন বলে কিছু নেই। দিন রাত চব্বিশ ঘণ্টা ব্যস্ত। এত টাকা আয় করে কিন্তু আরাম করে এক কাপ চা খাওয়ার সময় নেই।

অকুপেশনাল থেরাপি/ফিজিও থেরাপি
বর্তমানে ফিজিও থেরাপির চাহিদা বেড়েছে প্রচুর। ঢাকার সাভারের সি আর পি (সেন্টার ফর রিহ্যাবিলিট্যাশন অব প্যারালাইজড) তে এ বিষয়ে পড়ানো হয়। এই পেশার ভবিষ্যত খুবই ভালো। তাই যারা মেডিকেলে পড়ার প্ল্যান করছেন তারা ডেন্টালের পাশাপাশি সি আর পি তে আবেদন করবেন অবশ্যই। সি আর পির শাখা মিরপুরেও আছে। তবে সাভারেরটা প্রধান হাসপাতা।
ফ্যাশন ডিজাইন
চাকরির স্কোপ কম। আমার পরামর্শ হলে টাকা খরচ করে এই সাব্জেক্টে পড়ার কোন মানে নাই।
হোটেল ম্যানেজমেন্ট, হসপিটালিটি ও ট্যুরিজম
চাকরি আছে তবে সে পরিমাণে নেই। স্যালারিও আহামরি কিছু না। আমাদের পর্যটন খাত এখনো সেভাবে ডেভেলপড হয়নি।
যে সাব্জেক্টেই পড়েন না কেন সব সময় ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার চেষ্টা করবেন। আরেকটা বিষয়, অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সাব্জেক্টেই চান্স পাননা কেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলে অবশ্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন। সেটা যত সাধারণ বিষয়ই হোক না কেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে চাকরির বাজারে বহুগুণ এগিয়ে রাখবে।
বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভালো টিচার আগের মত নেই। ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লে একটা ভালো পরিবেশ পাওয়া যায়। এই পরিবেশ আপনাকে জীবনের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাটা দেবে। আপনাকে কর্মজীবনের জন্য প্রস্তুত করে দেবে। আপনার এই প্রস্তুতিই ভালো একটি চাকরির জন্য সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন। ভালো সাবজেক্ট, ভালো রেজাল্ট তখন গৌণ হয়ে যায়। তাছাড়া, যে বিষয়েই পড়েন না কেন কিছু সাধারন বিষয়ে আপনাকে দক্ষ হতেই হবে। মৌখিক পরীক্ষায় শুধুমাত্র বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন করা হয় না।
অনু-জীববিদ্যা বিষয় নিয়ে পড়লে কি হবে??
১.জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং এর জব সেক্টর বাংলাদেশে কেমন?
২.রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোনোমি এন্ড এগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগ,ক্রভ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি,ফিশারিজ,ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্স সাবজেক্টগুলো এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাবজেক্টগুলোর জব ফিল্ডে চাহিদা এবং সেলারি কেমন?
৩.খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,জগ্ননাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি সাবজেক্ট এর ডিমান্ড কেমন?
৪.জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও মাইক্রোবায়োলজি সাবজেক্ট এর ডিমান্ড কেমন?
১. জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সরাসরি জব বাংলাদেশে কম। আইসিডিডিআরবিতে কিছু জব আছে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর বেশিরভার স্টুডেন্ট দেশের বাইরে চলে যায়। দেশের বাইরে চাহিদা অনেক।
২. ভেটেরিনারি আর ফিশারিজের চাহিদা বেশ ভালো। বিশেষ করে ভেটেরেনারি তো প্রচুর চাহিদা। আপনি চাকরি না করেও শুধুমাত্র প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেই অনেক আয় করতে পারবেন। এগ্রিকালচার ডিপার্টমেন্টের সরকারি চাকরিই প্রচুর। তাদের বিসিএস ক্যাডার পোস্ট আছে আর সব সার্কুলারেই অনেক পোস্ট থাকে। বেশরকারি চাকরিও অনেক। স্যালারি ২৫ হাজার থেকে সাধারনত শুরু হয়।
৩. ফার্মেসির ডিমান্ড সব সময় ছিল, আছে, থাকবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের অন্যতম ফার্মেসি ডিপার্টমেন্ট তাদের ক্যান্ডিডেট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বা জগ্ননাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে প্রায়োরিটি পাবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়টি নতুন হওয়ায় তাদের ক্যান্ডিডেট নিয়ে একটু সংশয় হয় তো কাজ করবে। কিন্তু চাকরির অভাব কখনোই হবে না।
৪. জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর চাকরি বাংলাদেশে কম। বায়োকেমিস্ট্রি ও মাইক্রোবায়োলজি সাবজেক্ট এর ডিমান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিতে অনেক। আর ঢাকার বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জগন্নাথে এখন সব মেধাবীরাই ভর্তি হতে চায়। ফলে জগন্নাথের চাহিদা ঢাকা বা জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতই হচ্ছে।
ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অথবা ফুড টেকনোলজি অথবা ফুড সেফটির ক্যারিয়ার কেমন??
বাংলাদেশের পরিচিত যত গুলো কোম্পানি আছে তারা প্রায় সবাই বিভিন্ন ফুড আইটেম বাজারে আনছে। তাদের লোকবল প্রয়োজন। ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অথবা ফুড টেকনোলজি চাহিদা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। অর্থাৎ জব সেক্টর তৈরি হয়েছে। কাজেই ভবিষ্যত ভালো। ফুড সেফটির বিষয়টি নিয়ে ইদানিং সবাই সচেতন। কিন্তু কোম্পানি গুলো সেফটি বিষয়ে ততটা গুরুত্ব দেয় না। কাজেই লোক নিয়োগ দিতে গড়িমসি করে। সরকারের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ অফিসে ফুড সেফটি বিষয়ক পদ থাকলেও সেগুলো নির্দিষ্ট কিছু পদ। ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অথবা ফুড টেকনোলজির মত ক্যারিয়ার ফুড সেফটির হবে না।
ভাইয়া,বায়োকেমিস্ট্রি নিয়ে পড়তে ইচ্ছুক।
মেয়ে হিসেবে এই সাবজেক্টে পড়ে ঠিক কী কী সরকারি চাকরি পাব তা জানতে চাই।
বায়োকেমিস্ট্রির সরকারি চাকরির পোস্ট আছে- বিসিএসআইআর, এটমিক এনার্জি কমিশন এ। এই দুই প্রতিষ্ঠানেই সব চেয়ে বেশি পদের সার্কুলার হয়। কিন্তু এই দুই প্রতিষ্ঠানে রেজাল্ট বেশ গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে।
বিসিএস এডুকেশন ক্যাডারে রসায়নের লেকচারার হিসেবে মোট পদের ৩০% বায়োকেমিস্ট্রির স্টুডেন্টদের নেয়া হয়। এ ছাড়াও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, বিএসটিআই এ কিছু সার্কুলার হয়।
বায়োকেমিস্ট্রির বেশিরভাগ স্টুডেন্ট দেশের বাইরে চলে যায়, বাইরে এদের চাহিদা প্রচুর।
আমি নিজে কেমিস্ট্রির স্টুডেন্ট, যদি দেশেই থাকার ইচ্ছা থাকে তাহলে বলব কেমিস্ট্রি বা বায়োকেমিস্ট্রি এভয়েড করতে। অনার্স মাস্টার্সে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয় (থিওরি আর প্র্যাক্টিক্যাল দুইটাই) সে তুলনায় রিটার্ন কম। আর মেয়েদের জন্য কেমিস্ট্রি বা বায়োকেমিস্ট্রির প্রাইভেট জব একেবারেই সুইটেবল না (আমি স্কয়ার ফার্মায় ৯ বছর চাকরি করেছি, আমার বউ এস কে এফ ফার্মাতে ৩ বছর ছিল, বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।) বায়োকেমিস্ট্রি পড়লে ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে জব হয় কিন্তু বেতন একেবারেই ফালতু।
যদি অন্য সাব্জেক্টে চান্স না পান তাহলে বায়োকেমিস্ট্রি পড়তে পারেন কিন্তু পছন্দ করে পড়া মনে হয় না ভালো কোন সিদ্ধান্ত যদি না বাইরে পিএইচডি করতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে।
আপনাকে ধন্যবাদ।
স্যার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন পড়লে কি বেসরকারি চাকরি ( ফার্মাসিউটিক্যালস, গার্মেন্টস ) পাইতে কি কোনো সমস্যা হয়?? বলতে চাচ্ছিলাম যে জাতীয় থেকে পড়া জন্য কি তারা অন্যদের থেকে কম গুরুত্ব পায় সেখানে?
২. জাতীয়তে রসায়ন না পড়ে বেসরকারিতে আইন পড়া কতটা যুক্তি সম্পন্ন হবে, স্যার??
আমাকে স্যার বলার প্রয়োজন নেই।
১. প্রথম দিকের ফার্মাসিউটিক্যালস গুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টদের প্রায়োরিটি বেশী দেয়। তবে চাকরি পেতে সমস্যা হয় না।
তবে মধ্যম মানের কোম্পানি গুলো সমস্যা করে না। যেমন- স্কয়ার ফার্মাতে পাবলিক আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা আলাদা সার্কুলার হয়। বেতন ভিন্ন হয়।
২. যদি সামর্থ্য থাকে তাহলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি/ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুন যেহেতু আপনি বিজ্ঞান বিভাগের। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া মানেই পিছিয়ে যাওয়া।
৩. আইন বিষয়টি আপনার মেধার উপর নির্ভর করবে। ডাক্তারদের মতই। শুধুমাত্র পাশ করলেন আর ভালো ইনকাম করতে শুরু করলেন এমন না। ভালো ডাক্তারি করা চাই। তেমনি
ভালো আইনজীবীও হতে হবে।
আসসালামু আলাইকুম, ভাইয়া।
১. ভাইয়া ইংরেজি বিষয়ে যেকোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লে ঠিক কি কি ধরনের চাকরি পাওয়া যাইতে পারে? ( আমি বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, ফার্মেসী/ EEE পড়ার মতো তেমন অবস্থা নেই)
২. আমি যেহেতু বিজ্ঞানের ছাত্র তাই বিবিএ নিয়ে তেমন ধারণা নেই?? ইংরেজি বা বিবিএ কোন বিষয়টা ভালো হবে বর্তমান চাকরির বাজারে??
ইংরেজি না পড়ে বিবিএ পড়ুন। ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন। ইংরেজির জন্য স্পেসিফিক কোন জব নেই (শিক্ষকতা ছাড়া)। বিবিএর জন্য জব অনেক।
আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া, ১. ঢাকার দিকে গিয়ে এখন প্রাইভেটে পড়া সম্ভব না। সেজন্য, Bangladesh Army University of Engineering and Technology (BAUET) এ বিবিএ পড়লে কেমন হবে?
২. ভাইয়া, শুনেছি বিবিএ পড়লে ইন্টার্নশিপ করা লাগে কিছু মাস। সেক্ষেত্রে সরকারি ব্যাংকে কি ইন্টার্নশিপ করা যায়? আর ইন্টার্নশিপ না করলে কি কোনো সমস্যা হয়?
৩. সর্বশেষ বিষয় হলো ভাইয়া, বিবিএ করার পর অনেকেই উচ্চতর ডিগ্রি CA করে। এখন বাংলাদেশে কি সকল সরকারি – বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখ করে আমি যেইটাতে পড়তে আগ্রহী সেইটা থেকেও এই CA করা সম্ভব?
১. BAUET ও অনেকটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মতই। সেখানেও পড়ার খরচ বেশি। খোজ নিয়ে দেখবেন। তবে প্রতিষ্ঠান ভালো।
২. ইন্টার্নিশিপ করতেই হবে। এটা ডিগ্রির একটা অংশ। সরকারি ব্যাংকে করা যাবে না এমন কোন নির্দেশনা নেই। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলো ইন্টার্নশিপ করাতে চায় না।
৩. আপনি HSC পাশ করেও সিএ করতে পারবেন। সিএ অন্যান্য সাধারণ ডিগ্রির মত না। এটা কোন ইউনিভার্সিটি থেকে দেয় না। সিএ পড়তে চাইলে আপনাকে আইসিএবি তে (ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্টেন্ট বাংলাদেশ) আবেদন করতে হবে। সিএ শেষ করতে কম বেশি ৫ বছর লাগে। তবে শেষ করতে পারলে ভবিষ্যৎ খুবই ভালো।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সাব্জেক ভালো হবে। বিজ্ঞান বিভাগ। গণিত / পরিসংখ্যান, রসায়ন ( একটু কম পারি) , বা বিভাগ পরিবর্তন করে অর্থনীতি বা কমার্স এর সাব্জেক নেওয়া ঠিক হবে কি?
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে লাইফ নস্ট করে কি লাভ? রসায়নের চাকরি আছে। অন্যান্য গুলোর তেমন নেই।
বিভাগ পরিবর্তন করলে সহজ কোন বিষয় নিন। অর্থনীতি নিলে গনিত করতে হবে। কমার্সে গেলে একাউন্টিং নিবেন।
ভাইয়া রাবি তে সাবজেক্টচয়েসএর বেলায় এগ্রিকালচার এবং ভেটেরিনারি এরমাঝে কোনটা কে আগে দিব?? একজন মেয়ে হিসেবে৷ কোনটা আমার জন্য সুবিধা হবে??
দুইটাই সুবিধাজনক। ভেটেরিনারির প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুবিধা আছে। চাকরির স্কোপ ও বেশি। আমাদের ধারণা ভেট মানেই গরু ছাগলের চিকিৎসা করা। অথচ পোষা পাখি কিংবা কবুতরের চিকিৎসক পাওয়া যায় না। আর পোষা পাখি বা কবুতর যারা পালে তারা তাদের পাখির চিকিৎসার জন্য আপনাকে গাড়িতে করে নিয়ে যাবে।
আপনি ভেটেরিনারি ফার্স্ট চয়েস দিবেন।
অবশ্যই ফিজিওথেরাপি। ফিজিওথেরাপিস্টদের চাহিদা সম্পর্কে আপনার কোন ধারণাই নেই। যত দিন স্ট্রোক রোগী থাকবে ততদিন ফিজিওথেরাপি লাগবেই। অন্যান্য অসুখের কথা বাদই দিলাম না হয়।
ভাইয়া, আমার ফ্যামিলি কোনো ভাবেই দিবে না বেসরকারি কোথাও পড়তে।আমি সাত কলেজে মনোবিজ্ঞান বিভাগে চান্স পেয়েছি।পড়ার ইচ্ছে না থাকলেও কোনো ওয়ে আমার জন্য খোলা নাই।একটু বলবেন এইখানে এই কম ডিমান্ডেবল সাব পড়ে কি হনে আমার?
খুব একটা লাভ নেই। যে কোন একটা ভালো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ভালো। ঐ সাত কলেজে পড়ে খুব একটা ভালো করতে পারবেন এমন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হলেও আদতে ওদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতই বিবেচনা করা হয়।
ভাইয়া ম্যানেজম্যান্ট নিয়ে পড়লে ভালো হবে নাকি রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে?কোনটায় সিজিপিএ ভালো উঠানো সম্ভব?
এ দুটোয় কোনটার চাহিদা কেমন?
কোনটা তুলনামূলক সহজ হবে এন্ড বেসিক পড়ে ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব?
প্লিসস রিপ্লাই দিয়েন🙂
বেসিক পড়ে ভালো রেজাল্ট কোন সাবজেক্টেই করা সম্ভব না। ম্যানেজমেন্টের চাহিদা বেশি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ(মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড না),জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি নাকি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন।ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার চিন্তা এবং নিজের খরচে নিজের পড়াশোনা বিবেচনায় রেখে কোথায় ভর্তি হওয়া উচিৎ?
#Urgent
কঠিন চয়েস! নিজের খরচ বিবেচনায় নিলে ঢাকা বা জগন্নাথ প্রায়োরিটি পায়। জাহাঙ্গীরনগর থেকে টিউশনি করতে ঢাকা যাওয়া লাগে। আবার ইংরেজি থেকে অনার্স করলে টিউশনির অভাব নেই। বিসিএস যদি আপনার টার্গেট হয় তাহলে ঢাকা ইউনিভার্সিটি বেটার অপশন। অনার্সে আপনি কি রকম পড়াশোনা করবেন এর উপর ভবিষ্যত ক্যারিয়ার নির্ভর করে। ইংরেজিতে ভর্তি হলেন। সারা বছর পড়ালেখা করলেন না তাতে আপনার কোন ক্যারিয়ারই হবে না। ইংরেজিতে ভর্তি হয়ে যদি ভালোভাবে ইংরেজি আয়ত্ত করতে পারেন (পড়া, লেখা এবং বলা) তাহলে ইংরেজিতেই ভর্তি হোন। জব সেক্টরে ইংরেজিতে দক্ষ লোকের খুবই অভাব। যেকোনো ভাইভা শুধুমাত্র স্মার্ট ইংলিশ একসেন্টে কথা বলে কনভিন্স করা যায়।
জগন্নাথে আইনের দুইটা সাবজেক্ট আছে একটা শুধু আইন অন্যটা ভূমি আইন সংক্রান্ত। আপনার কোনটা হয়েছে? আইন পড়ার ক্ষেত্রেও আপনাকে ভালোভাবে আইন পড়তে হবে। উরাধুরা পড়লে হবে না। তাছাড়া জগন্নাথে আবাসিক হলের সুবিধা নেই, ওদের ইউনিভার্সিটির খরচ ও বেশি।
ইসলামিক স্টাডিজের সাথে মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের কোন সম্পর্ক নেই। আপনি রেজাল্ট ভালো করলেন কি করলেন না এতে কিছু যায় আসে না। এই সাবজেক্টে ভর্তি হয়েই চাকরির জন্য পড়াশোনা শুরু করবেন। কেননা ইংরেজি বা আইনের মত বিকল্প কোন চাকরি নেই। কিন্তু ঢাবির পরিবেশ পাবেন। ওদের লিংকিং ভালো।
আমার মতেঃ
১. জাহাঙ্গীরনগরে ইংরেজি। টিউশনি করতে পারবেন, হলে থাকতে পারবেন, যে কোন চাকরি পরীক্ষায় ভালো করবেন, জাহাঙ্গীরনগরের খরচ কম।
২. ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ইসলামিক স্টাডিজ। টিউশনি করতে পারবেন, ঢা. বি.র পরিবেশ পাবেন। চাকরির স্কোপ নিজেকে করে নিতে হবে। বিষয় ভিত্তিক চাকরি নেই।
৩. জগন্নাথের আইন। টিউশনি করতে পারবেন, পড়াশোনের খরচ বেশি, হলে থাকার সুযোগ নেই বললেই চলে সেক্ষেত্রে মেসে থাকতে হবে সেটারও ব্যয় বেশি।